দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করােনা আক্রান্ত হয়ে আরও ১৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে করােনায় মােট প্রাণহানি হলাে ১৪ হাজার ৯১২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করােনা শনাক্তের হার ২৭.৩৯ শতাংশ। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২২ হাজার ৬৮৭টি।শনিবার (৩ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানাে হয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে জানানাে হয়, দেশে নতুন করে আরও ৬ হাজার ২১৪ জনের শরীরে করােনা শনাক্ত হয়েছে। হিসেব অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশে মােট করােনা শনাক্ত হয়েছে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৬ জন।
আরও পড়ুনঃ শনাক্তেও সর্বোচ্চ রেকর্ড করােনা ভাইরাস।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানাে হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করােনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৭৭৭ জন। এ নিয়ে মােট সুস্থ হলাে ৮ লাখ ২৯ হাজার ১৯৯ জন।উল্লেখ্য, দেশে করােনার প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিলাে গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।করােনা স্থবির করে দিয়েছে গােটা বিশ্বকে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ, সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও। তবে এই মহামারির মধ্যেও কিছু মানুষ কখনও করােনায় আক্রান্ত হবে না। সম্প্রতি এক নতুন গবেষণায় এমনটি দাবি করা হয়েছে।
গবেষণাটি গত মাসে সেল জার্নালে প্রকাশ করা হয় বলে জানিয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্ট।গবেষণায় বলা হয়, কিছু লােকের প্রতিরােধ ব্যবস্থা করােনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। তাদের শরীরে এমন ধরনের টি সেল’ রয়েছে যার কারণে তারা কখনও আক্রান্ত হবেন না।সমীক্ষায় দেখা গেছে, কিছু লােক যাদের করােনাভাইরাস কখনও প্রকাশ হয়নি। তাদের শরীরে সহায়ক ‘টি সেল রয়েছে; যা এটি শনাক্ত করতে এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম।
ওই গবেষণায় বলা হয়, বিভিন্ন ধারার ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার কারণে অনেক মানুষের শরীরে ভাইরাসবিরােধী টি সেল’ তৈরি হয়। এই সেল করােনা রুখে দিতে সক্ষম।সায়েন্স অ্যালার্ট বলছে, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই সক্ষমতাকে বলা হয় ক্রস-রিয়েক্টিভিটি।গবেষণায় মােট ৪০ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে ২০ জন করােনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সেরে উঠেছে। বাকি ২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে।
যারা অন্য কোনাে ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিলেন। সেই ২০ জন আক্রান্ত হয়নি।বিজ্ঞানীরা আরও দাবি করছেন, যাদের শরীরে মৃদু করােনা। ভাইরাসের উপসর্গ ছিল, তাদের শরীরেও এমন কিছু টি সেল’ এবং অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পারে যেগুলাে ভবিষ্যতে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।গবেষণায় দেখা গেছে, করােনা থেকে সেরে ওঠা ২০ জনের শরীরেই শ্বেত রক্তকণিকা এবং অ্যান্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে। আর ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালে যেসব নমুনা নেয়া ছিল, সেগুলাের ৫০ শতাংশের মধ্যেও সিডি৪+নামের টি-সেল পাওয়া গেছে।
গবেষণার সহকারী আলেসান্দ্রো সেটে বলেছেন, ‘টি সেল খুব দ্রুত শক্তিশালী রােগ প্রতিরােধ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ভাইরাস শরীরে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করলেও টি সিলের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা এটিকে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।প্রসঙ্গত প্রাণঘাতী নভেল করােনাভাইরাসে সারাবিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ লাখ ৩২ হাজার ৯৮৫ জন।এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ৩ লাখ ৯১ হাজার ১৩৬ জন। ইতােমধ্যে বিশ্বের ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ প্রাণঘাতী ভাইরাস।করােনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ লাখ ৭২ হাজার আর মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার মানুষের।
আপনার মতামত জানান